চট্টগ্রামের লোহাগাড়ায় নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট তৈরির সঙ্গে জড়িত একটি প্রতারক চক্রকে গ্রেফতার করেছে লোহাগাড়া থানা পুলিশ। অভিযানে তিনজনকে গ্রেফতার করা হয় এবং নকল সার্টিফিকেটসহ বিভিন্ন আলামত জব্দ করা হয়।
চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার মো. সাইফুল ইসলাম সানতু এর সার্বিক দিকনির্দেশনায় সাতকানিয়া সার্কেলের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. আরিফুল ইসলাম সিদ্দিকীর তত্ত্বাবধানে এবং লোহাগাড়া থানার অফিসার ইনচার্জ মো. আরিফুর রহমানের নেতৃত্বে এ অভিযান পরিচালিত হয়।
পুলিশ জানিয়েছে, গত ৩ নভেম্বর রাতে এসআই গোবিন্দ্র চন্দ্র দাস গোপন সংবাদের ভিত্তিতে জানতে পারেন, আমিরাবাদ ইউনিয়নের কাজিরপুকুর পাড় দোহা বিল্ডিং এলাকায় আলমগীর নামের এক ব্যক্তি নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি করছে। পরবর্তীতে রাত ৯টা ৩৫ মিনিটে সেখানে অভিযান চালিয়ে আলমগীরের কাছ থেকে একটি নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স উদ্ধার করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আলমগীর জানায়, সে আল আকসা ট্রাভেলসের মালিক শাহ আলমের কাছ থেকে ২৮ হাজার টাকার বিনিময়ে ওই নকল সার্টিফিকেট সংগ্রহ করেছে। পরে শাহ আলমকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনসহ গ্রেফতার করা হয়। তার মোবাইলে নকল ক্লিয়ারেন্স তৈরির প্রমাণ মেলে।
জিজ্ঞাসাবাদে শাহ আলম জানায়, সে উক্ত ক্লিয়ারেন্স মো. বেলাল নামের এক ব্যক্তির মাধ্যমে সংগ্রহ করেছে। এরপর গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে রাত ১০টা ৫০ মিনিটে লোহাগাড়া থানার সামনে একটি কম্পিউটার দোকানে অভিযান চালিয়ে মো. নাজাত নামের এক ব্যক্তিকে গ্রেফতার করা হয়।
জিজ্ঞাসাবাদে নাজাত স্বীকার করে, সে দীর্ঘদিন ধরে টাকার বিনিময়ে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি করে বিক্রি করে আসছে। তার কাছ থেকে দুটি সিল ও একটি মোবাইল ফোন জব্দ করা হয়।
নাজাত আরও জানায়, সে অর্থের বিনিময়ে মো. জাহেদ, মো. রিদুয়ান ও মো. রাজা মিয়ার কাছে নকল ক্লিয়ারেন্স সরবরাহ করেছে।
গ্রেফতারকৃত ও পলাতক আসামিরা পরস্পর যোগসাজশে নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স তৈরি ও বিক্রির মাধ্যমে প্রতারণা ও জালিয়াতি করে আসছিল। তাদের বিরুদ্ধে নিয়মিত মামলা রুজু করা হয়েছে।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা হলো- মো. আলমগীর (২৬), মো. শাহ আলম (৫০) ও মো. নাজাত (২৩)।
পলাতক আসামিরা হলেন- মো. বেলাল, মো. জাহেদ, মো. রিদুয়ান, মো. রাজা মিয়াসহ আরও ১০-১৫ জন অজ্ঞাতনামা ব্যক্তি।
জব্দকৃত আলামতের মধ্যে আছে- একটি নকল পুলিশ ক্লিয়ারেন্স সার্টিফিকেট, একটি স্যামসাং গ্যালাক্সি মোবাইল, একটি রেডমি স্মার্টফোন, দুটি সরকারি কর্মকর্তা পরিচিতিসহ জাল সিল।
পুলিশ জানায়, গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে এবং পলাতক আসামিদের গ্রেফতারে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।


