জেএসএস এবং ইউপিডিএফ-এর সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামে নতুন করে সংঘাত চাইছে অভিযোগ করে, পাহাড়ে সেনা ক্যাম্প স্থাপন জনগণের নিরাপত্তার জন্য একটি অপরিহার্য রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ বলে মত দিয়েছে সিএইচটি সম্প্রীতি জোট।
পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের অবস্থান জানাতে
শনিবার (১ নভেম্বর) চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এসব কথা বলেছেন সংগঠনটির নেতারা।
সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়, পার্বত্য চট্টগ্রামে সাম্প্রতিক ঘটনাবলীর প্রেক্ষিতে রাষ্ট্রের সার্বভৌমত্ব, শান্তি ও সম্প্রীতির পক্ষে সিএইচটি সম্প্রীতি জোটের অবস্থান পার্বত্য চট্টগ্রামের চলমান পরিস্থিতি নিয়ে বিভ্রান্তিকর ও উত্তেজনামূলক কিছু প্রচারণা সোশ্যাল মিডিয়া ও স্থানীয় পর্যায়ে ছড়িয়ে পড়েছে, যা দুঃখজনক ও উদ্দেশ্যমূলক।
সিএইচটি সম্প্রীতি জোট মনে করে, বাংলাদেশের সংবিধান প্রদত্ত সার্বভৌমত্ব, ভৌগোলিক অখণ্ডতা এবং আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর ভূমিকার প্রতি পূর্ণ শ্রদ্ধা প্রদর্শন করা প্রত্যেক নাগরিকের দায়িত্ব।
জোটের আহ্বায়ক ইঞ্জিনিয়ার থোয়াই চিং মং শাক বলেন, “জেএসএস এবং ইউপিডিএফ-এর সন্ত্রাসীরা পার্বত্য চট্টগ্রামের উন্নয়ন নয়, সংঘাত চায়। তারা নিজেদের অবৈধ স্বার্থ রক্ষায় শান্তিপ্রিয় পাহাড়িদের জীবনকে জিম্মি করছে।”
তিনি বলেন, ”খাগড়াছড়ির বর্মাছড়িতে সেনা ক্যাম্প স্থাপন জনগণের নিরাপত্তার জন্য একটি অপরিহার্য রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ। কিন্তু তারা বৌদ্ধ মন্দিরকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করে নিরীহ পার্বত্য চট্টগ্রামে অ-বাঙালিদের ভুল বোঝাচ্ছে, যা ধর্মীয় সম্প্রীতি বিনষ্টের শামিল। আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই এবং সকল নিরীহ পাহাড়িকে এসব মিথ্যাচার থেকে দূরে থাকার আহ্বান জানাই।”
আমরা বিশ্বাস করি — পার্বত্য চট্টগ্রামে শান্তি, উন্নয়ন ও সহাবস্থান কেবলমাত্র রাষ্ট্রীয় সংস্থা, স্থানীয় প্রশাসন ও জনগণের পারস্পরিক সহযোগিতার মাধ্যমেই টেকসই হতে পারে, তিনি যোগ করেন।
থোয়াই চিং মং শাক বলেন, “পার্বত্য চট্টগ্রাম বাংলাদেশের অবিচ্ছেদ্য অংশ। এখানে বাংলাদেশের সংবিধান ও জাতীয় আইনই সর্বোচ্চ। কোনো সংগঠন বা ব্যক্তি এ অঞ্চলে “রাষ্ট্র-বিরোধী বিভাজনমূলক বক্তব্য” বা “আঞ্চলিক বিভাজন” সৃষ্টির চেষ্টা করলে তা দেশপ্রেমের পরিপন্থী।”
“দেশের স্বাধীনতা-সার্বভৌমত্ব ও পার্বত্য অঞ্চলে শান্তি-স্থিতিশীলতা রক্ষায় সেনাবাহিনী এবং অন্যান্য নিরাপত্তা বাহিনীর ভূমিকা অনন্য। তারা পাহাড়ের জনগণের নিরাপত্তা ও উন্নয়নে নিরলসভাবে কাজ করে যাচ্ছেন। রাষ্ট্রের চলমান উন্নয়ন কার্যক্রমে আমরা জনগণকে সম্পৃক্ত হওয়ার আহ্বান জানাই। কোনো ঘটনার প্রেক্ষিতে বিভ্রান্তি ছড়ানো বা ঘৃণামূলক প্রচার নয় বরং সংলাপ, সহনশীলতা ও আইনানুগ পথে সমস্যা সমাধানের মাধ্যমেই পার্বত্য চট্টগ্রামকে প্রকৃত অর্থে “সম্প্রীতির পাহাড়” হিসেবে গড়ে তোলা সম্ভব,” কলে মত দেন তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও বলা হয়, “সিএইচটি সম্প্রীতি জোট দেশের সকল নাগরিক, অ-বাঙ্গালীও বাঙ্গালী জনগোষ্ঠী, শিক্ষক, শিক্ষার্থী, সাংবাদিক ও রাজনৈতিক নেতৃবৃন্দকে আহ্বান জানাচ্ছে ভ্রাতৃত্ববোধ, ঐক্য ও সংবিধানসম্মত শান্তির পথে একত্রে কাজ করার জন্য।”
সেনাবাহিনী ও প্রশাসনের বিরুদ্ধে বিভ্রান্তি বা উস্কানিমূলক প্রচারণা পরিহার করার জন্য পার্বত্য চট্টগ্রামকে উন্নয়নশীল, শিক্ষা ও সম্প্রীতির উদাহরণ হিসেবে গড়ে তোলার আহব্বান জানাই। সিএইচটি সম্প্রীতি জোট দৃঢ়ভাবে বিশ্বাস করে, শান্তি ও সম্প্রীতি কেবল তখনই প্রতিষ্ঠিত হবে, যখন আমরা সবাই “এক বাংলাদেশ, এক পতাকা, এক ভবিষ্যৎ”-এর আদর্শে ঐক্যবদ্ধ থাকব।


