চট্টগ্রাম নগরের জিইসি মোড়ের একটি কনভেনশন সেন্টারে কনসার্টকে ঘিরে সংঘর্ষের ঘটনায় গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত যুবক নগর ছাত্র দলের কর্মী। তার নাম নাজির শরিফ (২৩)। তিনি নগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলামের অনুসারী বলে জানা গেছে। ছাত্রদলের নেতাকর্মীদের দাবি, নাজিম শরিফ পুলিশের গুলিতেই আহত হয়েছেন।
আহত নাজির শরিফকে চট্টগ্রাম মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে। তার বাঁ কাঁধের নিচে গুলি লেগেছে। তার শারীরিক অবস্থা উন্নতির দিকে বলে জানিয়েছেন নগর ছাত্রদলের সদস্য সচিব শরিফুল ইসলাম।
তিনি বলেন, ‘আহত শরিফ ওমরগণি এমইএস কলেজ ছাত্রদলের কর্মী। তবে দলে তার কোনো পদ নেই। ঝামেলা হচ্ছে শুনে কনসার্ট এলাকায় খোঁজখবর নিতে গিয়েছিলেন তিনি। সেখানে গুলিতে আহত হন নাজিম শরিফ। তার শারীরিক অবস্থা এখন উন্নতির দিকে। এ ঘটনায় কী ব্যবস্থা নেওয়া হবে, সেটি কেন্দ্রে আলোচনা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।’
ঘটনার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এ ঘটনার ৩১ সেকেন্ডের একটি ভিডিও ছড়িয়ে পড়ে। এতে দেখা যায়, কনভেনশন সেন্টারের ফটকের বাইরে মানুষের জটলা। তারা সেখান থেকে ইট-পাটকেল নিক্ষেপ করতে থাকে। বাইরে দাঁড়িয়ে থাকা জটলার দিকে লক্ষ্য করে গুলি ছুড়েছেন সাদাপোশাকে থাকা এক পুলিশ সদস্য। তার পেছনে শটগান হাতে ছুটে আসেন আরও কয়েকজন। মুহূর্তেই সামনের জটলা ছত্রভঙ্গ হয়ে যায়।
যে কারনে সংঘর্ষ : কনসার্টে থাকা প্রত্যক্ষদর্শীর একজন জানান, কনসার্ট শুরুর পর সন্ধ্যায় ব্যান্ডদল আর্টসেল মঞ্চে উঠে গান গাইতে। তারা দুটি গান পরিবেশনের পর আর গান গাইতে অপারগতা জানায়। এশার আজান হওয়ার কিছুক্ষণ আগে কনসার্টের সামনে থাকা কয়েকজন যুবক ‘শেখ হাসিনা-শেখ হাসিনা’ ও ‘জয় বাংলা’ বলে স্লোগান দেন। এ সময় কনসার্টে উপস্থিত স্থানীয় বিএনপি নেতাকর্মীদের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষ হয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। সংঘর্ষের কারনে পণ্ড হয়ে যায় কনসার্ট।
নগর পুলিশের অতিরিক্ত উপকমিশনার (গণমাধ্যম) শ্রীমা চাকমা বলেন, ‘মোটরসাইকেল উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠান “হোন্ডা” কর্তৃক আয়োজিত একটি অনুষ্ঠান ছিল জিইসি কনভেনশন হলে। ওই অনুষ্ঠানের একটি অংশ ছিল কনসার্ট। আয়োজকরা কনসার্টের অনুমতি নেয়নি। একপর্যায়ে সেখানে উচ্ছৃঙ্খল কিছু যুবক ও তরুণ ভাঙচুর চালায়। পুলিশ খবর পেয়ে সেখানে গিয়ে লাঠিচার্জ করে।’
সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা : কনসার্টে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। রবিবার (১২ অক্টোবর) সকালে নগরের খুলশী থানায় পুলিশ বাদী হয়ে এ মামলা দায়ের করে। মামলায় ৪০০ থেকে ৫০০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করা হয়েছে। ঘটনাস্থল থেকে গ্রেফতার ১০ জনকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে।
নগর পুলিশের উপপুলিশ কমিশনার (উত্তর) আমিরুল ইসলাম এ তথ্য নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, ‘শনিবার রাতে কনসার্টে সংঘর্ষের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে। সংঘর্ষের সময় ঘটনাস্থল থেকে পুলিশ দশ জনকে গ্রেফতার করেছে। তাদেরকে এ মামলায় গ্রেফতার দেখানো হয়েছে। ঘটনায় জড়িত বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলমান আছে।’