ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন যতই ঘনিয়ে আসছে, ততই উত্তপ্ত হয়ে উঠছে রাজনৈতিক মাঠ। কেন্দ্র থেকে তৃণমূলে প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর কোন্দল, গ্রুপিং যখন তীব্র আকার ধারণ করেছে, তখন চট্টগ্রাম-১ (মিরসরাই) আসনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর প্রার্থী এডভোকেট সাইফুর রহমান নিয়মিত জনসংযোগ, উঠান বৈঠক ও প্রচারণা চালিয়ে ভোটারদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাচ্ছেন। বিশেষ করে নতুন ও তরুণ ভোটারদের মধ্যে তিনি বেশ জনপ্রিয় হয়ে উঠেছেন।
গ্রামের চায়ের দোকান থেকে শুরু করে উপজেলার অফিসপাড়া— সর্বত্র এখন নির্বাচনী আলোচনা। সে আলোচনায় প্রধান রাজনৈতিক দল বিএনপি থেকে কে মনোনয়ন পাচ্ছেন সেটিও গুরুত্ব পাচ্ছে। কারন এ আসনে জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট সাইফুর রহমান এর সাথে মূলত প্রতিদ্ধন্ধিতা হবে বিএনপি প্রার্থীর। এ নির্বাচনে জীবনের প্রথম ভোট দিতে উদগ্রীব তরুণ ভোটাররা বলছেন, এবারের ভোট তাদের কাছে উৎসবের মতো।
নির্বাচন কে ঘিরে প্রতি শুক্রবার উপজেলার কোন না কোন মসজিদে মুসল্লীদের উদ্দেশ্যে কোরআন হাদিসের আলোকে জীবন গঠন ও সমাজ ব্যবস্থা নিয়ে বক্তব্য রাখছেন এডভোকেট সাইফুর রহমান। পাশাপাশি জামায়াতে ইসলামী এবং ছাত্র শিবিরের নেতা কর্মীরা এডভোকেট সাইফুর রহমান এর নির্দেশে স্বেচ্ছায় নিজস্ব অর্থায়নে বিভিন্ন এলাকার ছোটখাটো সমস্যা রাস্তা ঘাট সংস্কার, ফুটপাত পরিস্কার, দরিদ্র দায়গ্রস্ত পিতাকে সহায়তা, শিক্ষা উপকরণ বিতরণ কাজগুলো নিয়মিত করে যাচ্ছেন। রাজনৈতিক অস্থিরতার বিপরীতে তাদের এসব মানবিক কাজগুলো নজর কাড়ছে সাধারণ মানুষের।
এছাড়া নির্বাচনী প্রস্তুতি হিসেবে কর্মী সভা, কেন্দ্র কমিটি গঠন, পাড়া বৈঠক, দাওয়াতি কার্যক্রম চালিয়ে যাচ্ছে পুরুষ এবং মহিলা ইউনিট।
প্রার্থী ছাড়াও জামায়াতে ইসলামী ও সহযোগী সংগঠন গুলোর নেতা কর্মীরা রাতদিন চষে বেড়াচ্ছেন মিরসরাইয়ের প্রত্যন্ত অঞ্চলে।
বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট সাইফুর রহমানের পক্ষে মিরসরাই উপজেলার দুটি থানায় চলছে ব্যাপক কর্মকাণ্ড। মিরসরাই উপজেলা জামায়াতের আমির নুরুল কবির জানতে চাইলে বলেন, ত্রয়োদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে ঘিরে বাংলাদেশ জামায়াতের ইসলামীর দিকে তাকিয়ে আছে সাধারণ মানুষ। ৫৪ বছর নির্বাচনের নামে মানুষ প্রহসন দেখেছে। মানুষের ভাগ্যের কোন পরিবর্তন হয়নি। লুটেরা শ্রেনী ক্ষমতাকে পুঁজি করে দেশের টাকা বিদেশে পাচার করেছে। গরিব আরো গরিব হয়েছে, শিক্ষা ব্যবস্থা, চিকিৎসা ব্যবস্থা ধ্বংস হয়েছে। সে কারনে তাদের সন্তানদের লেখাপড়া, তাদের চিকিৎসা এদেশে হয়না। বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী আগামী নির্বাচনে দুর্নীতি মুক্ত, চাঁদাবাজ মুক্ত ইনসাফ ভিত্তিক রাষ্ট্র ব্যবস্থা চালু করতে নির্বাচন কে একটি আন্দোলন হিসেবে নিয়েছে। জুলাই আগস্ট গনঅভ্যুত্থানে ছাত্র -জনতার যেভাবে বিজয় হয়েছে। আসন্ন জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামীর সৎ যোগ্য প্রার্থী এডভোকেট সাইফুর রহমান কে এবার বিপুল ভোটে বিজয়ী করবে মিরসরাই বাসি। আমরা ব্যপক সাড়া পাচ্ছি মানুষের মাঝে।
জোরারগঞ্জ থানা জামায়াতের আমির নুরুল হুদা হামিদী জানতে চাইলে বলেন, এডভোকেট সাইফুর রহমান যোগ্যতা বিবেচনায় অতুলনীয় প্রার্থী। মিরসরাই বাসি পরিকল্পিত আধুনিক মিরসরাই গড়তে এবার দাঁড়িপাল্লায় ভোট দিয়ে বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী মনোনীত প্রার্থী এডভোকেট সাইফুর রহমান এর বিজয় নিশ্চিত করবেন।
এডভোকেট সাইফুর রহমান এর ব্যক্তিগত পরিচিতিঃ
এডভোকেট সাইফুর রহমান ১৯৬৯ সালে মিরসরাই উপজেলার মিঠানালা ইউনিয়নের পশ্চিম মিঠানালা গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন। তাঁর পিতা মরহুম মাওলানা আব্দুল হক নিজামী ছিলেন অবসরপ্রাপ্ত শিক্ষক এবং মাতা শায়েস্তা বেগম গৃহিণী। ৬ ভাই ২ বোনের মধ্যে তিনি বড়। প্রাথমিক শিক্ষা গ্রামের বিদ্যালয়ে সমাপ্ত করে ১৯৮৪ সালে এসএসসি, ১৯৮৭ সালে এইচএসসি, ১৯৮৯ সালে বিএ এবং ১৯৯২ সালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় থেকে এমএ সম্পন্ন করেন। পরে একই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে আইন বিষয়ে ডিগ্রি নিয়ে ২০০০ সালে বার কাউন্সিল থেকে আইন পেশার সনদ লাভ করেন। বর্তমানে তিনি সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের আইনজীবী এবং সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল।
ছাত্রজীবন থেকেই রাজনীতির সঙ্গে সম্পৃক্ত হয়ে তিনি ইসলামী ছাত্রশিবিরের বিভিন্ন পদে দায়িত্ব পালন করেন। পরবর্তীতে জামায়াতের লিগ্যাল টিমের অন্যতম সদস্য হিসেবে যুদ্ধাপরাধ ট্রাইব্যুনালে একাধিক আলোচিত মামলা পরিচালনা করেন।
সম্প্রতি এক সাক্ষাৎকারে এডভোকেট সাইফুর রহমান নানাবিধ বিষয় নিয়ে আলোচনা করেছেন। তার এ সাক্ষাৎকার ctgpost24.com এর পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো-
প্রশ্ন: আপনি কোন দল/জোট থেকে মনোনয়ন প্রত্যাশা করছেন?
উত্তর: বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী।
প্রশ্ন: কেন মনে করেন আপনিই সেরা প্রার্থী?
উত্তর: আমি একজন ক্লিন ইমেজের আইনজীবী। দীর্ঘদিন ধরে মিরসরাইয়ের সাধারণ মানুষের আইনি সেবা দিয়ে আসছি। সুপ্রিম কোর্ট বারের নির্বাচিত সহ-সম্পাদক এবং সরকারের ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে জনগণের আস্থা অর্জন করেছি। জামায়াতের প্রার্থীদের মধ্যেও যোগ্যতার বিচারে আমি সবচেয়ে গ্রহণযোগ্য।
প্রশ্ন: নির্বাচিত হলে আপনার প্রথম তিন অগ্রাধিকার কী হবে?
উত্তর: ১। মিরসরাই অর্থনৈতিক অঞ্চলে ব্যাপক কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা। ২। আধুনিক ও সমৃদ্ধ মিরসরাই গড়তে বিশেষজ্ঞ টিম গঠন করে সমস্যার সমাধান। ৩। সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও দখলদারিত্ব নির্মূল।
প্রশ্ন: আপনার এলাকায় সবচেয়ে বড় সমস্যা কোনটি?
উত্তর: রাজনৈতিক অস্থিরতা ও প্রশাসনিক সমন্বয়হীনতা।
প্রশ্ন: বিগত সংসদ সদস্যদের ব্যর্থতা কোথায় দেখেন?
উত্তর: অতিরিক্ত দলীয়করণ ও দুর্নীতি।
প্রশ্ন: নির্বাচনী খরচ ও সম্পদের হিসাব কি প্রকাশ করবেন?
উত্তর: অবশ্যই।
প্রশ্ন: তরুণদের জন্য আপনার পরিকল্পনা কী?
উত্তর: ভাষাগত ও কারিগরি শিক্ষার পাশাপাশি আধুনিক নাগরিক হিসেবে গড়ে তুলতে বিস্তৃত কর্মপরিকল্পনা হাতে নেব।
প্রশ্ন: নিরপেক্ষ নির্বাচন নিয়ে আপনার প্রত্যাশা কী?
উত্তর: জি, আমি আশাবাদী।
প্রশ্ন: যুবসমাজের কর্মসংস্থান নিয়ে আপনার পরিকল্পনা কী?
উত্তর: অর্থনৈতিক অঞ্চল, পর্যটন ও অন্যান্য খাতে কর্মসংস্থানের ব্যবস্থা করা এবং তরুণদের দক্ষ করে কাজে লাগানো।
প্রশ্ন: মাদক, সন্ত্রাস, চাঁদাবাজি ও ভূমিদস্যুতা নিয়ে আপনার অবস্থান কী?
উত্তর: পাবলিক ট্রায়েলের মাধ্যমে জনসচেতনতা, আইনি সহায়তা এবং জনবান্ধব কর্মসূচি গ্রহণ করে এগুলো নির্মূল করব।
সব শেষে এডভোকেট সাইফুর রহমান যোগ করেন, আসন্ন নির্বাচন হবে গণঅভ্যুত্থানের আকাঙ্ক্ষা পূরণের এক আন্দোলন। তাঁর অঙ্গীকার— ন্যায় প্রতিষ্ঠা করে একটি ইনসাফভিত্তিক রাষ্ট্র গঠন। আর সেই স্বপ্ন বাস্তবায়নের লক্ষ্যে তিনি মিরসরাইয়ের ভোটারদের দ্বারে দ্বারে পৌঁছে যাচ্ছেন।