ভারতের তামিলনাড়ুতে জনপ্রিয় নায়ক ও রাজনীতিবিদ বিজয়ের নির্বাচনি সমাবেশে ভয়াবহ দুর্ঘটনা ঘটেছে। পদদলিত হয়ে শিশুসহ অন্তত ৩৪ জনের মৃত্যু হয়েছে। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা করছে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। দেশটির বার্তাসংস্থা পিটিআই এ তথ্য নিশ্চিত করেছে।
হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছে, ইতোমধ্যে প্রায় ৫০০ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে এবং আরও অন্তত ৪০০ জনকে আনা হচ্ছে। এ ঘটনায় রাজ্যজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। সিনিয়র পুলিশ কর্মকর্তা ডেভিডসন দেবাসিরভাথাম বলেন, আহতদের অবস্থা অনেকেরই আশঙ্কাজনক।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, সমাবেশস্থলে অন্তত ৩০ হাজার মানুষ উপস্থিত ছিলেন। তারা ছয় ঘণ্টারও বেশি সময় ধরে অপেক্ষা করছিলেন। তবে বিজয় দেরিতে পৌঁছালে ভিড় নিয়ন্ত্রণের বাইরে চলে যায়। হঠাৎ ধাক্কাধাক্কিতে অসংখ্য মানুষ মাটিতে পড়ে পদদলিত হন। নিহতদের বেশিরভাগই বিজয়ের রাজনৈতিক দল তামিলাগা ভেট্ট্রি কাজগম (টিকেভি)–এর সমর্থক।
দুর্ঘটনার পর বিজয় নিজের বক্তব্য থামিয়ে দেন এবং প্রচারণার বাস থেকে আহতদের পানি বিতরণ করেন। তবে অতিরিক্ত ভিড়ের কারণে অ্যাম্বুলেন্স ঘটনাস্থলে পৌঁছাতে বেশ বেগ পেতে হয়। আহতদের তাৎক্ষণিকভাবে বিভিন্ন হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
রাজ্যের স্বাস্থ্যমন্ত্রী এম সুব্রামানিয়ান ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। মুখ্যমন্ত্রী এম কে স্ট্যালিন জেলা প্রশাসনকে পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণের নির্দেশ দিয়েছেন। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যম এক্সে তিনি লিখেছেন, “এখন পর্যন্ত যা খবর পাচ্ছি, তা উদ্বেগজনক। সমাবেশে জ্ঞান হারানোদের তাৎক্ষণিক চিকিৎসার ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে।”
প্রসঙ্গত, কয়েকদিন আগে মাদ্রাজ হাইকোর্ট বিজয়ের সমাবেশ নিয়ে সতর্ক করেছিল। ১৩ সেপ্টেম্বর ভিন্ন এক সমাবেশে বিশৃঙ্খলার ঘটনার পর বিচারপতি এন সাথিশ কুমার বলেছিলেন, “কোনও অঘটনের দায় নেবে কে? দলীয় সভাপতি হিসেবে বিজয়ের ভিড় নিয়ন্ত্রণ করা উচিত।” সেই ধারাবাহিকতায় টিকেভি গত ২০ সেপ্টেম্বর একটি বিজ্ঞপ্তি দিয়ে গর্ভবতী নারী, শিশু, প্রবীণ, অক্ষম ও অসুস্থ ব্যক্তিদের সমাবেশে না এসে অনলাইনে যুক্ত হওয়ার আহ্বান জানিয়েছিল।
তবে সতর্কবার্তা সত্ত্বেও বিপুল জনসমাগমে এমন মর্মান্তিক ঘটনা ঘটল। এ ঘটনায় ক্ষমতাসীন দল ডিএমকের পক্ষ থেকে বিজয়ের গ্রেফতারের দাবি উঠেছে।