শুক্রবার, ৩১ অক্টোবর ২০২৫
Single Top Banner

চট্টগ্রাম বন্দরে মিথ্যা ঘোষণায় ৬০ হাজার কেজি ঘনচিনি আমদানি করেছে এইচ পি ইন্টারন্যাশনাল

নিজস্ব প্রতিবেদক :

চট্টগ্রাম বন্দরে সোডা অ্যাশ লাইট ঘোষণায় চীন থেকে আমদানি করা হয়েছে তিনটি কনটেইনার ভর্তি ৬০ হাজার ৪৮০ কেজি ঘনচিনি। মিথ্যা ঘোষণায় আনা এ তিনটি কনটেইনারে প্রায় দুই কোটি টাকার শুল্ক ফাঁকির চেষ্টা হয়েছে বলে জানিয়েছে কাস্টমস কর্মকর্তারা। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে সেন্ট্রাল ইন্টেলিজেন্স সেল ঢাকা এবং কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর এর সহযোগিতায় গোপন সংবাদের ভিত্তিতে এ তিনটি কনটেইনার শনাক্তের পর আটক করা হয়।

মঙ্গলবার (২১ অক্টোবর) এক বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে জানিয়েছে চট্টগ্রাম কাস্টমসের ডেপুটি কমিশনার এইচ এম কবির।

তিনি বলেন, গত ১৬ আগস্ট ঢাকার মতিঝিলের আমদানি কারক প্রতিষ্ঠান এইচ পি ইন্টারন্যাশনাল সোডা অ্যাশ লাইট ঘোষণা দিয়ে চীন থেকে তিনটি কনটেইনারে ৬০ হাজার ৪৮০ কেজি ঘনচিনি চট্টগ্রাম বন্দরে আমদানি করে। এসব মালামাল খালাসের জন্য দায়িত্ব দেওয়া হয় চট্টগ্রামের সিটি গেইট এলাকার উত্তর কাট্টলীর গোল্ডেন কনটেইনার লিমিটেড নামের প্রতিষ্ঠানকে। গোপন সংবাদের ভিত্তিতে বিষয়টি জানতে পেরে চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস এ তিনটি কনটেইনার খালাস স্থগিত করে।

তিনি আরও বলেন, গত ১৬ সেপ্টেম্বর কাস্টমস গোয়েন্দা ও তদন্ত অধিদপ্তর, ডিপো কর্তৃপক্ষ, সিঅ্যান্ডএফ এসোসিয়েশনের প্রতিনিধির উপস্থিতিতে কনটেইনার তিনটি কায়িক পরীক্ষা করা হয়। পরে পণ্যের নমুনা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ন্যানোপ্রযুক্তি সেন্টার, খুলনা বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয় ল্যাব এবং চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউস ল্যাবে রাসায়নিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো করা হয়। পরবর্তীতে তিনটি ল্যাব থেকেই রাসায়নিক পরীক্ষার প্রতিবেদনে উক্ত পণ্যকে ঘনচিনি হিসেবে নিশ্চিত করা হয়েছে।

চট্টগ্রাম কাস্টমস সূত্র জানিয়েছে, ঘনচিনি একটি কৃত্রিম মিষ্টিকারক। যা সাধারণ চিনির চেয়ে প্রায় ৩০ থেকে ৫০ গুণ বেশি মিষ্টি। বিভিন্ন ধরনের মিষ্টান্ন, বেকারি আইটেম, আইসক্রিম, বেভারেজ, জুস, চকোলেট, কনডেন্সড মিল্ক এবং শিশু খাদ্য তৈরিতে সাধারণ চিনির পরিবর্তে কতিপয় অসাধু ব্যবসায়ী এই ক্ষতিকারক কৃত্রিম উপাদানটি ব্যবহার করে থাকে। ঘনচিনি দিয়ে তৈরি খাদ্য জনস্বাস্থ্যের জন্য মারাত্মক ক্ষতিকর। ঘনচিনির দ্বারা প্রস্তুতকৃত খাদ্য ক্যান্সারসহ কিডনি ও লিভারের জটিল রোগের কারণ হতে পারে। ঘনচিনির অপব্যবহার রোধকল্পে সরকার পণ্যটিকে আমদানি নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে। আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ এর আমদানি নিষিদ্ধ পণ্যের তালিকায় ঘনচিনি অন্তর্ভুক্ত রয়েছে।

আমদানি নীতি আদেশ ২০২১-২০২৪ এর বিধান মোতাবেক নিষিদ্ধ ঘনচিনি আমদানি করায় কাস্টমস আইন, ২০২৩ এর বিধান মোতাবেক পণ্যচালানটি কাস্টমস হাউস, চট্টগ্রাম কর্তৃক আটক করা হয়েছে এবং আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণের কার্যক্রম প্রক্রিয়াধীন আছে।

উল্লেখ্য, আলোচ্য পণ্যচালানটির শুল্কায়নযোগ্য মূল্য প্রায় দুই কোটি টাকা এবং ঘনচিনির ক্ষেত্রে প্রযোজ্য শুল্ক-করহার ৬১ দশমিক ৮০%। জনস্বাস্থ্য রক্ষায় বাংলাদেশ কাস্টমসের যে অঙ্গীকার তার যথার্থ প্রতিফলন আমদানি নিষিদ্ধ ঘনচিনির এই চালানটি আটক।

Single Sidebar Banner
  • সর্বশেষ
  • পঠিত